কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও থেকে চট্রগ্রাম-রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রতিবছরে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ডাব যাচ্ছে। আর ৫০ লাখ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে স্থানীয়দের কাছে। উপজেলার ঈদগাঁও’র প্রায় শতাধিক ডাব ব্যবসায়ী ব্যস্ত সময় পার করছেন। বসত বাড়িতে, পতিত জমিতে, উঁচু জমিতে, ঘেরের পাড়সহ বিভিন্ন জমিতে লাগানো গাছ থেকে উৎপাদিত ডাবই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। তবে বৃহত্তর ঈদগাঁওর কোথাও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ চাষ হয় না।
সদরের পোকখালী ইউনিয়নের আলমগীর ২০ বছর ধরে এ ব্যবসা করেন।
তিনি বলেন, সামান্য পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেন। এলাকা থেকে তিনি নিজে ডাব কিনে ঈদগাঁও বাজারসহ আশেপাশের উপজেলাতে বিক্রি করতেন। ব্যবসায়ের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন তিনিসহ অপারাপর ডাব ব্যাবসায়ীরা প্রতিদিন অন্তত এক ট্রাক ডাব ঢাকা, চিটাগাংসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠান।
ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোমরিয়াঘোনার ডাব ব্যাবসায়ী মো. আলম বলেন, সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওতে অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দেয়া আছে। তারা প্রতিদিন এলাকা ঘুরে গৃহস্তের গাছ থেকে ডাব কিনে। গাছ থেকে সংগ্রহ করা ডাব তিনটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের কাছ থেকে আকার ভেদে এই ডাব ১২ থেকে ১৫ টাকায় ক্রয় করে। স্থানীয় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে সেই ডাব তারা ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করে। যা ঢাকাসহ বড় শহরে ২৬ থেকে ২৮ টাকা পাইকারী দরে বিক্রি হয়।
ইসলামপুর খাঁনঘোনার কৃষক মো. আলতাজ মিয়া বলেন, তার বাড়িতে ১৯টি নারিকেল গাছ আছে। প্রতি গাছ থেকে বছরে ৫০ থেকে ১০০ ডাব বিক্রি করেন তিনি।
ঈদগাঁও ইউনিয়নের পালপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কাজল পাল জানান, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে কৃষকদের বাড়ি থেকে প্রতিদিন তিনি ১০০ থেকে ২০০ ডাব ক্রয় করে প্রতিদিনই বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করেন। দিনে তার ৫০০ থেকে ১০০টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।
জালালাবাদ মোহনভিলার ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, একটি ট্রাকে ৫-৭ হাজার ডাব পরিবহন করা যায়। ঈদগাঁও থেকে এক ট্রাক ডাব ঢাকায় নিতে পরিবহন খরচ দিতে হয় ১৭-১৮ হাজার টাকা। পথে অন্তত ২০টির অধিক স্থানে ১০-১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়।
ইসলামাবাদ ঢালার দোয়ারের ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, প্রতিদিন ১/২ ট্রাক ডাব বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। একটি ট্রাকে ১লক্ষ ২০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকার ডাব থাকে। দিনে ৩/৪ লক্ষ টাকার ডাব বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা হয়। আর বছরে অন্তত অর্ধ কোটি টাকার ডাব রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন বলেন, ডাবে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে এছাড়া ডাবের পানির অসংখ্য গুণাগুণ রয়েছে যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শিশুসহ সবারই পরিমাণমত ডাবের পানি পান করা উচিত। তবে খালি পেটে ডাবের পানি পান না করে কিছু খাওয়ার পর পান করার পরামর্শ দেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক জানান, আমরা কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছি। নারিকেল গাছের উপর আমাদের আলাদা প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রতিবছরই কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের নারিকেল চারা বিতরণ করা হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-